ফরিদপুরে রাস্তার কাজে নিয়োজিত এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকরা হলেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমামুল খান (২৫), উপজেলা ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি আবু মুসা ওরফে প্রিন্স মুসা (২২) ও ছাত্রলীগ কর্মী জসীম মোল্যা (২০)। তাদের সবার বাড়ি উপজেলার মাঠ সালথা এলাকায়।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আটকদের ফরিদপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাসা কনস্ট্রাকশন উপজেলা সদরের মাঠ সালথার কলেজ রোড এলাকায় দুই কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজ করছিল। ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেই কাজের মালামালের ট্রলি ঠেকিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ৮-১০ জন যুবক। এসময় ট্রলির ড্রাইভারকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পরে ঠিকাদার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে। এসময় অন্যরা পালিয়ে যান।
এ ব্যাপারে তাসা কনস্ট্রাকশনের সত্ত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকার কয়েকজন যুবক কক্সবাজারে যাওয়ার খরচ চেয়ে মালামালের ট্রলি আটকিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এর আগে তাদের ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে চাঁদা দাবির বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে গ্রেফতার আবু মুসার ভাই ইলিয়াস মোল্যা বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি রাস্তায় নিম্নমানের কাজ করছে এমন অভিযোগে আমার ভাইসহ স্থানীয় কয়েকজন এর প্রতিবাদ করেন। চাঁদা দাবির বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায় সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। সেখানকার একটি পক্ষ বলছে রাস্তার নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে বাধা দেওয়া হয়েছে। আবার আরেকটি পক্ষ বলছে ট্রলি থামিয়ে তারা চাঁদা দাবি করেছে। তাই আমরা সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করবো। কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর সাংগঠনিকভাবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক সাংবাদিকদের বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে থানাতে একটি এজাহার দায়েরের পর তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কি না তা আমার জানা নেই। গ্রেফতারদের দুপুরে ফরিদপুরের কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।