দুই মাস ধরে সড়ক সংস্কার কাজ বন্ধ, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

দুই মাসের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মিঠাছড়া-বামনসুন্দর সড়কের কাজ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলার চার ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন এ সড়ক ব্যবহার করলেও দুর্ভোগ লাঘবে কোনো পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্টদের।

স্থানীয়রা জানান, এ সড়ক দিয়ে মিঠানালা, কাটাছরা, দুর্গাপুর ও মিরসরাই সদর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। এছাড়া মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মিঠাছড়া মাদরাসা, মিরসরাই কলেজসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও গত দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সংস্কার কাজ। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই এখানকার বাসিন্দাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, কার্পেটিং ছাড়া সড়ক সংস্কারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কটির সংস্কার কাজ কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি আর যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তের ভিতর পানি জমে চলাচলের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। দ্রুত সড়কটি সংস্কার না হলে যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

মেজবাহ উদ্দিন বাবু নামের এক ব্যক্তি বলেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। মোটরসাইকেল নিয়ে তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেও চলা সম্ভব হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না।

মিঠাছরা বাজারের আল ফারুক ক্লথ স্টোরের মালিক মো. মোর্শেদ আলম বলেন, প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে দুই থেকে চারবার যাতায়াত করি। রাস্তার অবস্থা এমন যে, সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়।

মিঠাছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু ছালেহ বলেন, রাস্তার যে অবস্থা একটু বৃষ্টি হলে স্কুলে যেতে পারি না। পুরো রাস্তায় পানি জমে থাকে। গাড়ি চলাচলের কারণে আমাদের গায়ে পানি পড়ে স্কুল ড্রেস ময়লা হয়ে যায়।

মিরসরাই সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম দিদার বলেন, উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় রাস্তার বিষয়টি তুলে ধরেছি। রাস্তাটা খুবই খারাপ যে গাড়ি নিয়ে তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে যাওয়ায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। আশা করছি শিগগির রাস্তাটির কাজ শেষে হবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দা নিউ ট্রেড লিংকের সত্ত্বাধিকারী মো. তাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, মিঠাছড়া-বামনসুন্দর সড়কের সাড়ে চার কিলোমিটার অংশের কাজ পায় আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের মে মাসে টেন্ডার হয়ে ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। জুন মাস থেকে কাজ শুরু করেছি। দুই কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দের সংস্কার কাজ শুরু করার কিছুদিন পর আমার স্ত্রী খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে নিয়ে প্রায় একমাস হাসপাতালে ছিলাম। এজন্য কাজ বন্ধ ছিল। দু একদিনের মধ্যে পুনরায় সংস্কার কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রণী সাহা বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টির পানিতে রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ করলে সেগুলো উঠে যাবে। মানুষের সাময়িক কষ্ট হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা প্রতিদিন আবহাওয়া দেখছি আশাকরি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাজ পুনরায় চালু হবে।